ইতিহাস

Brief History

ছাত্রদের জন্য পালনীয় বিধিনিষেধ
১. প্রত্যেক ছাত্রকে অবশ্যই কুরআন ও সুন্নাহর পূর্ণ অনুসারী হতে হবে।
২. সালাফ ও খালাফকে আদর্শ হিসেবে গ্রহন করতে হবে।
৩. উস্তাদের নেগরানি ব্যতিত মাদরাসার বাইরে কোন ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করা যাবে না।
৪. রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোন সংগঠনের সাথে জড়িত থাকা যাবে না।
৫. কোন ছাত্রের সাথে গভীর বন্ধুত্বও করা যাবে না আবার কারো সাথে শত্রুতা মনোভাবও পোষণ করা যাবে না।
৬. উঠাবসা হবে কেবল নিজ জামাতের ছাত্রদের সাথেই। এক জামাতের ছাত্র অন্য জামাতের ছাত্রদের সাথে মিশবে না
ও কোনোরূপ লেনদেন করবে না।
৭. উপরের শ্রেণির ছাত্রদেরকে বড় ভাই হিসেবে সম্মান করবে আর নিচের শ্রেণির ছাত্রদেরকে ছোট ভাই হিসেবে স্নেহ
করবে। উভয়ের মাঝে যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে চলবে।
৮. জুব্বা কিংবা কল্লি জামা পরিধান করবে। এমব্রয়ডারি করা জামা কিংবা আঁটসাঁট জামা, রঙিন গেঞ্জি, প্যান্ট, শার্ট,
ট্রাওজার ইত্যাদি পরিধান করা যাবে না।
৯. দরস চলাকালে মাদরাসার লোগো সম্বলিত নির্ধারিত ড্রেস ও সর্বদাই পাঁচকলি টুপি ব্যবহার করতে হবে।
১০. সবার সাথে সচ্চরিত্র, সদ্ভাব, সদাচরণ, সত্যবাদিতা, আমানতদারি, সহমর্মিতা ও সহানুভুতিশীল থাকবে।
১১. কোনো আন্যায় দেখলে তার প্রতিকার/ প্রতিশোধ নিজ হাতে না নিয়ে সংশ্লিষ্ট উস্তাদকে অবহিত করবে।
১২. উস্তাদ ও গুরুজনদের যথাযথ সম্মান করবে। তাদের প্রতি সুধারণা রাখবে। ছুটিপরবতীর্ সাক্ষাতে সালাম—মুসাফাহা
করে কুশল বিনিময় করবে।
১৩. প্রতিষ্ঠান ও উস্তাদ কতৃর্ক সকল ফায়সালা (বুঝে আসুক বা না আসুক) নিজের জন্য কল্যাণকর মনে করবে।
১৪. কোনো বিষয় সম্পর্কে মনে প্রশ্ন জাগলে সরাসরি উস্তাদের সাথে কথা বলবে। নিজেদের মাঝে পরস্পরে আলোচনা—
সমালোচনা করবে না।
১৫. সময়কে যথাযথ কাজে লাগিয়ে সর্বদা অধ্যয়নে মগ্ন থাকবে।
১৬. মাদরাসার সুনাম অর্জন, রক্ষা, ও বর্ধনে সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করবে।
১৭. মাদরাসার যাবতীয় বিধি—নিষেধ পুঙ্খানুপুুুুুুুুুুঙ্খভাবে পালন করবে।

আবাসিক ছাত্রদের প্রতি নির্দেশনা
১. মাদরাসার আবাসিক যাবতীয় বিধি নিষেধ মাথা পেতে মেনে নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
২. মাদরাসার অভ্যন্তরে মোবাইল, এফ এম রেডিও, ভিডিও গেমস, দাবা, লুডু, তাস ইত্যাদি রাখা, ব্যবহার করা, বহন করা
সম্পূর্ণ নিষেধ। এগুলো কারো কাছে পাওয়া গেলে বহিষ্কারযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।
৩. মাদরাসার অভ্যন্তরে ইস্ত্রি, হিটার, বেলেন্ডার, ব্যক্তিগত ফ্যান অনুমতি ব্যতিত ব্যবহার করা যাবে না।
৪. দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক কোনো পত্রিকা, মেগাজিন, নোবেল ইত্যাদি মাদরাসায় রাখা, পড়া ও অন্যান্য
ছাত্রদের সাথে এসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
৫. পোষাক—পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে নিজেদের কামরা, বারান্দা, সিঁড়ি, টয়লেট ইত্যাদি পরিস্কার রাখতে হবে।
৬. মাদরাসার যাবতীয় আসবাব যেমন: তেপায়া, টেবিল, গদি, দরজা, দেয়াল, পাখা, বাতি ইত্যাদির হেফাজতে যত্নবান
হতে হবে।
৭. অভ্যন্তরীন কোনো সমস্যার কথা সর্বপ্রথম দরস মুশরিফকে (ক্লাস টিচারকে) অবহিত না করে অভিভাবক কে
অবহিত করা যাবে না।
৮. একজনের জিনিসপত্র আরেকজন ব্যবহার করবে না। এমনকি বিনা অনুমতিতে ধরবেও না।
৯. সর্বদাই মাদরাসার ভেতরে থাকার চেষ্টা করবে। বিনা প্রয়োজনে কিছুতেই বাইরে যাবে না। যেতে হলে দরস মুশরিফের
(ক্লাস টিচারের) অনুমতি নিয়ে যাবে।
১০. প্রত্যেক কামরায় রাতে ঘুমের সময় ডিম লাইট ব্যবহার করবে।
১১. গোসলের নির্ধরিত সময়ে গোসল ও ঘুমের সময়ে ঘুমাতে হবে। এর ব্যতিক্রম করা যাবে না।
১২. দরস চলাকালে অসুস্থতাবোধ করলেও সংশ্লিষ্ট উস্তাদের অনুমতি ছাড়া শয়ন করা যাবে না।
১৩. বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারকে গনিমত মনে করবে। এ দুদিনকে বিগত সপ্তাহের দরসগুলো তাকরার ও মুযাকারার
কাজে ব্যয় করবে।
১৪. মাদরাসায় অবস্থানকালে কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত কোন প্রকার ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।

মাদরাসার লেনদেন সম্পর্কে নির্দেশনা
১. প্রতি ইংরেজি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে মাদরাসার বেতন/টিউশন ফি পরিশোধ করতে হবে।
২. অফিস কতৃর্ক সরবরাহকৃত রশিদের মাধ্যমে লেনদেন করবেন। অন্যথায় কোনো সমস্যা হলে কতৃর্পক্ষ দায়ী থাকবে
না।
৩. লেনদেনের সকল রশিদ বছরের শেষ পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।
৪. বোর্ডিংয়ের খানার টাকা অগ্রিম দিতে হবে। অন্যথায় খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৫. পরীক্ষার পূর্বে সকল প্রকারের ফি হালনাগাদ করতে হবে।
৬. এগুলোর বাইরে কোনো আর্থিক লেনদেন করলে বিবিধের অংশে উস্তাদের স্বাক্ষরসহ তা লিপিবদ্ধ রাখবে।


ছুটির নিয়মাবলি
১. মাদরাসা কতৃক নির্ধারিত ছুটি ও পরীক্ষা পরবতীর্ ছুটি ছাড়া কোনো প্রকারের ছুটি দেওয়া হবে না।
২. জন্ম বার্ষিকী, মৃত্যু বার্ষিকী, খতনা অনুষ্ঠান, বিবাহ অনুষ্ঠান ইত্যাদির জন্য কোনো ছুটি নেই।
৩. অনিবার্য কারণে ছুটি নিতে হলে, অভিভাক কতৃর্ক অবগতির মাধ্যমে দরস নেগরানের সুপারিশ নিয়ে মুদীর থেকে
দরখাস্ত মঞ্জুর করাতে হবে।
৪. কাপড় ধোয়া, গোসল করা, টাকা আনা ইত্যাদি প্রয়োজনের জন্য বৃহস্পতিবারেও বাসায় যাওয়ার অনুমতি নেই।
অভিভাবক এসবের ব্যবস্থা করবে।
৫. দরস চলাকালে খণ্ডকালীন ছুটির জন্য মঞ্জুরকৃত দরখাস্ত হাযিরা খাতায় রেখে যেতে হবে।
৬. ছুটি ছাড়া দুটি দরসে অনুপস্থিত থাকলে পূর্ণদিন অনুপস্থিত বলে বিবেচিত হবে।
৭. নেগরানিতে (কোচিংয়ে) অংশগ্রহণকারী অনাবাসিক ছাত্রদের সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার যোহর থেকে শুক্রবার
আছর পর্যন্ত।
৮. উল্লিখিত ছাত্রদের শুক্রবার আসর থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত উপস্থিতি অপরিহার্য।
৯. ছুুটি থেকে এসে প্রথমে উস্তাদদের সঙ্গে সালাম মুসাফাহা করবে অতঃপর ক্লাসে বসবে।
১০. অনুপস্থিত থাকার কারণে ছুটে যাওয়া দরসগুলো অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উস্তাদের কাছ থেকে পড়ে নেবে।
১১. ছুটিতে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ দরস মুশরিফকে (ক্লাস টিচার) অবহিত করবে।
১২. ছুটির পর মাদরাসা খোলার প্রথম তারিখে অবশ্যই মাদরাসায় উপস্থিত থাকতে হবে।
১৩. আবাসিক ছাত্রদের মাদরাসা খোলার আগের দিন মাগরিবের পূর্বে মাদরাসায় উপস্থিত হতে হবে।
১৪. ছুটিতে থাকাবস্থায় অবশ্যই জামাতে নামাজ আদায়ের ইহতেমাম করবে।


দৈনন্দিন ২৪ ঘণ্টার রুটিন
 ফজরের নামাযের আধা ঘন্টা পূর্বে নিদ্রা ত্যাগ এবং নামাযের পূর্ব পর্যন্ত তেলাওয়াত।
 যে সকল ফরজ নামাযের পূর্বে সুন্নত আছে, সেই সমস্ত নামাযের ১০মিনিট পূর্বে আর অন্যান্য নামাযের জামাতের ৫
মিনিট পূর্বে মসজিদে যাওয়া।
 বাদ ফজর যিকিরের মজলিসে অংশগ্রহণ ও ‘সূরা ইয়াসীনে’র আমল।
 যিকিরের মজলিসের পর থেকে ৭.০০ পর্যন্ত কেরাতের ক্লাস।
 ৭.০০ থেকে ৭.৫০পর্যন্ত সকালের নাস্তা।
 সকাল ৭.৫০ থেকে ৮.১০ পর্যন্ত এসেম্বলি।
 সকাল ৮.১৫ থেকে দুপুর ১.৪৫ পর্যন্ত ক্লাস।
 ক্লাসের মাঝখানে সকাল ১১.১০ থেকে ১১.২৫ পর্যন্ত ১৫ মিনিট বিরতি।
 ক্লাস শেষে ২.০০টায় যোহরের নামায।
 যোহরের নামাজের পর ৩:০০টা পর্যন্ত দুপুরের খানা। ৩.০০টা থেকে আসরের আযানের ৫মিনিট পূর্ব পর্যন্ত বিশ্রাম।
 আসরের নামাযের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত তাফরিহ, শরীর চর্চা ও উন্মুক্ত পড়ালেখা।
 বাদ মাগরিব ‘সূরায়ে ওয়াকিয়া’ তেলাওয়াতের পর এশার নামাযের আযান পর্যন্ত ক্লাসের পড়া মুখস্থ করা।
 এশার নামাযের পূর্বে খানা উঠানো। এশার নামাযের পর ৪০ মিনিট রাতের খাবার
অতপর রাত ১০ টা পর্যন্ত ক্লাসের পড়া প্রস্তুত করা।
 ১০.১৫ টার মধ্যে জরুরত সেরে ঘুমানো ও বাতি, গেইট বন্ধ করা।
 বৃহস্পতিবার বাদ যোহর হতে আসরের আযানের পূর্ব পর্যন্ত বিশ্রাম।


জুমার দিনের রুটিন
 প্রতি বৃহস্পতিবার শেষ রাতে তাহাজ্জুদের আমল।
 শুক্রবার সকাল ৭.৩০ পর্যন্ত বিশ্রাম।
 ৭.৩০ থেকে ৮.৩০ পর্যন্ত নাস্তা।
 ৮.৩০ থেকে ৯.৩০ পর্যন্ত পড়াশুনা ।
 ৯.৩০ থেকে ১০.০০ টা পর্যন্ত সাফাই।
 ১০.০০ থেকে ১১.০০ টা পর্যন্ত গোসল।
 গোসলের পর সূরায়ে কাহাফের আমল এবং জুমার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা।
 জুমার নামাজে সকল ছাত্র ওস্তাদের নেগরানিতে মসজিতে যাওয়া এবং আসা।
 জুমার পর খাবার খেয়ে বিশ্রাম আসর পর্যন্ত।
 আসরের নামাজের দরূদের আমল। এরপর থেকে মাগরিব পর্যন্ত ব্যক্তিগত জরুরত পূরণ করা।
 মাগরিবের পর থেকে অন্যান্য দিনের রুটিন মাফিক কার্যক্রম।


প্রাতিষ্ঠানিক ছুটির তালিকা
ঈদুল আযহা : ১০ দিন। (১২ জিলহজ থেকে ২১ জিলহজ)
১ম সাময়িক পরীক্ষার পর : ৭ দিন।
২য় সাময়িক পরীক্ষার পর : ৭ দিন।
বার্ষিক পরীক্ষার পর : ১০ দিন।
ঈদুল ফিতর : ১২ দিন। (২৫ রমযান থেকে ৭ শাওয়াল)
আশুরা : ১ দিন।
১২রবিউল আউয়াল : ১ দিন
১৫ শাবান : ১ দিন।
২১ ফেব্রুয়ারী : ১ দিন।
১৭ মার্চ : ১ দিন
২৬ মার্চ : ১ দিন।
১৫ আগস্ট : ১ দিন
১৬ ডিসেম্বর : ১ দিন।

প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে কতৃর্পক্ষ যেকোনো প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে পারেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ছুটি ছাড়া কোনো ছাত্রকে ছুটি দেয়া হয় না। বিশেষ প্রয়োজনে ছুটি মঞ্জুর করা প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিবেচনার উপর নির্ভরশীল।



পরীক্ষা ও ফলাফল সংক্রান্ত নিয়মাবলি

শিক্ষাবষর্কে ৪টি পর্বে বিভক্ত করে সর্বমোট ৪টি মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা সম্ভাব্য সময় মান
মাসিক পরীক্ষা যিরক্বদ মাসের শেষ দশকে ৫০
প্রথম সাময়িক পরীক্ষা মহররম মাসের শেষ সপ্তাহে ১০০
দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা রবিউস সানীর শেষ সপ্তাহে ১০০
বার্ষিক পরীক্ষা শাবান মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ১০০


এ ছাড়া প্রত্যেক বিষয়ের শিক্ষক কর্তৃক ক্লাস টেস্ট (ঈ.ঞ) এবং মৌখিক পরীক্ষা (ঙ.ঞ) গ্রহণ করা হয়। উপরোক্ত সকল পরীক্ষার সময় মেধা তালিকা প্রণয়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রেডিং সিস্টেমে করা হয়। প্রাপ্ত গ্রেডিং একই হলে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা তালিকা নির্ণয় করা হয়। মেধা তালিকা প্রথম তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। পরবতীর্ ক্লাসে প্রমোশনের জন্য কমপক্ষে গড়ে ৫০% নম্বর পেতে হবে।

১. পরীক্ষার পর মাদরাসা খোলার এক সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রদান করা হবে।
২. ফলাফল প্রকাশের আগে প্রত্যেক পরীক্ষার খাতা শিক্ষার্থীর হাতে দিয়ে দেওয়া হবে।
৩. ফলাফলে কোনো অসঙ্গতি থাকলে ফলাফল প্রকাশের দুই দিনের মাঝে সংশোধনীর আবেদন করা যাবে।
৪. ফলাফল সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীল উস্তাদের স্বাক্ষরসহ প্রার্থীত নম্বর তালিমাতে জমা দিতে হবে।
৫. প্রত্যেক পরীক্ষার পর নতুন মাসে ফলাফলে প্রাপ্ত সিরিয়াল অনুযায়ী হাজিরা খাতায় নাম ওঠানো হবে।

যোগাযোগ ও সাক্ষাতের নিয়ম
 প্রতিদিন আসর থেকে মাগরিব, প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে মাগরিব এবং শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে মাগরিব
পর্যন্ত ছাত্র ও শ্রেণি নেগরান ওস্তাদের সাথে সাক্ষাত ও ফোনে কথা বলা যাবে।
 নির্ধারিত সময় ছাড়া সাক্ষাত/ফোন প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায় বিধায় আমরা সকল অভিভাবকের
নিকট এক্ষেত্রে সহযোগিতা কামনা করি।
 একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ছাত্রের সাথে ঘনঘন যোগাযোগ ও সাক্ষাত এড়িয়ে চলা ভালো। শ্রেণি শিক্ষকের কাছ থেকে
প্রয়োজনীয় খবরাখবর রাখা যেতে পারে।
 যেসকল ঘটনা, অনুষ্ঠান, সংবাদ ছাত্রের মনোযোগ নষ্ট করতে পারে, খুব বেশি জরুরি না হলে সেগুলো বলা থেকে
বিরত থাকুন।



অভিভাবকগণের প্রতি আরজ
১. মাদরাসার কানুন সমুন্নত রাখার ব্যাপারে আপনার সবোর্চ্চ সহযোগিতা কাম্য।
২. পারিবারিক অনুষ্ঠানাদির ক্ষেত্রে অবশ্যই মাদরাসা কর্তৃক নির্ধারিত ছুটির সময়কে নির্বাচন করবেন।
৩. মাদরাসার আর্থিক লেনদেন নিজ হাতে সময়মত সম্পাদন করবেন।
৪. লেখা পড়ার মনোন্নয়নের জন্য প্রতি তিন মাস অন্তর অভিভাবকের উপস্থিতি ও দরসের সাথে সম্পৃক্ত উস্তাদদের
সঙ্গে সাক্ষাত আবশ্যক।
৫. ছুটিকালীন ছাত্রের আখলাক ও সামাজিক আচরণের ব্যাপারে নিজে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে
দরস নেগরানকে অবহিত করবেন।
৬. উস্তাদদেরকে অবশ্যই ছাত্রের সর্বাঙ্গীন কল্যাণকামী মনে করবেন।
৭. ছাত্রের সামনে উস্তাদদের সমালোচনা করবেন না। উস্তাদের কোনো কাজকে কেন্দ্র করে ছাত্রের পক্ষাবলম্বন
করবেন না।
৮. প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে কোনো কথা থাকলে অবশ্যই কতৃর্পক্ষের সাথে বলবেন।
৯. মনে রাখবেন, একটি শিশুকে একাকী কোন উস্তাদের পক্ষে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। প্রয়োজন
একটি সুষ্ঠু ও মননশীল দ্বীনি পরিবেশ। এজন্য বাড়ির পরিবেশকে অবশ্যই দ্বীনি পরিবেশ বানাবেন। পিতা মাতা
নিজেরা ও দ্বীনদারি বজায় রেখে চলবেন।
১০. বাসায় টিভি, ভিসিডি, রেডিও, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি শরীয়ত গর্হিত কোন আসবাবপত্র রাখবেন না।
১১. নিজেরা যথাসময়ে নামাজ আদায় করবেন। বাচ্চাদেরকে নামাজের আদেশ করবেন। প্রয়োজনে শাসন করবেন।
১২. অন্যায়ে কখনো প্রশ্রয় দেবেন না। কোনো ভুল ক্রটি দেখলে তৎক্ষণাৎ শুধরে দেবেন।
১৩. প্রয়োজনীয় খরচাদির অতিরিক্ত টাকা পয়সা ছাত্রের হাতে দেবেন না।
১৪. ছাত্রের লেখা পড়ার খেঁাজ খবর নিবেন। ফলাফল ভালো করলে পুরস্কৃত করবেন। ফলাফল খারাপ হলে জবাবদিহি
চাইবেন।
১৫. মাদরাসার কানুন মাফিক ছাত্রের শাস্তির ক্ষেত্রে অভিভাবকের কোনোরূপ আপত্তি চলবে না।
১৬. মাদরাসা ছুটি থাকাকালে আপনিও একজন শিক্ষকের ভূমিকা পালনে সচেষ্ট হবেন।
১৭. প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট যে কোনো সমস্যা নিরসনে মাদরাসার মুদীরের (প্রধান শিক্ষকের) সাথে যোগাযোগ করবেন।
১৮. মহিলা অভিভাবকগণ অবশ্যই শরয়ী পর্দা মেনে চলবেন। ছাত্রের সাথে সাক্ষাত করতে এলে নেকাব পরে পর্দাসহ
আসবেন।
১৯. একাডেমির নেযাম (একাডেমিক সিস্টেম) বা আবাসিক কোনো সমস্যার অজুহাত দিয়ে বছরের মাঝখানে ছাত্র নিয়ে
যাওয়া যাবে না।
২০. ছাত্রের কাছে মোবাইল দেওয়া যাবে না। কোনো ছাত্রের কাছে মোবাইল থাকা বহিস্কারযোগ্য অপরাধ। জব্দকৃত
মোবাইল অফেরতযোগ্য।
২১. অনুমতি ব্যতীত কোনো ছাত্র মাদরাসার বাইরে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হলে কতৃর্পক্ষকে দায়ী করা যাবে না।


শিক্ষার্থীর অঙ্গীকার
১। মাদরাসার (বর্তমান এবং ভবিষ্যতে গৃহীতব্য) সকল আইন—কানুন যথাযথভাবে মেনে চলতে সচেষ্ট থাকব।
২। গুনাহমুক্ত যিন্দেগী গঠন ও নেক আমলের পাবন্দি করব।
৩। দরস, মুতালাআ ও তাকরারের পাবন্দি করব। পড়াশুনা ব্যতীত অন্য কোনো নেশা বা ব্যস্ততায় জড়াব না। পত্রিকা—
ম্যাগাজিন, অশ্লীল গল্প—উপন্যাস এবং ভ্রান্ত আক্বীদা ও চিন্তাধারার লোকদের লিখিত কোন বই—পত্র পড়ব না।
৪। সর্বদা সুন্নাত তরিকার অনুসরণ—অনুকরণ করব। সুন্নতি পোশাক—পরিচ্ছদ, চাল—চলন ও আচার—ব্যবহার গ্রহণ
করব। এ ব্যাপারে আমাদের আসলাফ ও আকাবিরদের তরিকাকেই নমুনা হিসাবে গ্রহণ করব।
৫। মাদরাসার ইউনিফর্ম এবং অনুমোদিত পোষাক এবং পাঁচ কল্লী টুপি ব্যবহার করব।
৬। মাথার চুল ও হাত—পায়ের নখ ছোট এবং গেঁাফ খাট করে রাখব। দাড়ি কখনও উপড়াব না এবং এক মুষ্টির কম
কাটব না।
৭। সংশ্লিষ্ট নেগরানের অনুমতি ব্যতীত কখনও মাদরাসা চত্বরের বাইরে যাব না। সর্বদা মাদরাসার মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত
নামায তাকবিরে উলার সাথে আদায় করার চেষ্টা করব।
৮। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোনো রাজনৈতিক দল বা ছাত্র সংগঠন বা সমিতির সাথে
কোনোভাবে জড়িত হব না। মাদরাসার অভ্যন্তরেও কোনো প্রকার দলাদলি করব না। এর ব্যতিক্রম করলে বহিস্কারের
উপযুক্ত সাব্যস্ত হব।
৯। মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে নিজের অধঃপতনের কারণ মনে করব, তাই নিজে ব্যবহার করব না অন্যকেও এ
ব্যপারে সহোযোগিতা করব না।
১০। প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও সুনাম—সুখ্যাতি রক্ষা ও তা বৃদ্ধির জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব। মসজিদের মুসল্লি, এলাকাবাসী
ও কমিটির সদস্যদের সাথে একজন আদর্শ তালিবে ইলমের মতো আচরণ করব। কমপ্লেক্সের কল্যাণে আর্থিক,
শারীরিক যে কোনো খিদমতের প্রয়োজন দেখা দিলে তাতে সানন্দে অংশ গ্রহণ করব।
১১। প্রতিষ্ঠানের উস্তাদগণের যথাযথ সম্মান ও খিদমতকে নিজের জন্য সৌভাগ্যের ওসীলা মনে করব এবং তাঁদের
অনুকরণ—নুসরণ নিজের কর্তব্য মনে করব। এ প্রতিষ্ঠানের খিদমতে নিয়োজিত সকলের প্রতি সদ্ভাব প্রদর্শন করব।
সকল ছাত্রের সাথে ভাই ভাই সুলভ ভদ্র আচরণ করব। কারো সাথে অযাচিত বন্ধুত্ব করব না। শত্রুতা রাখব না। কারো
সাথে কোন অবস্থাতেই ঝগড়া— ফাসাদ করব না।
১২। প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র যথাযথ হিফাজত করব। কোনো সম্পদের ক্ষতি আমি নিজেও করব না এবং অন্যকেও
করতে দেব না।
১৩। পানি, বাতি, পাখা ইত্যাদি খরচে মিতব্যয়ী হব এবং অপচয় সম্পর্কে সতর্ক থাকব।
১৪। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে যে খাদ্য ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়, তাই নিয়ামত মেনে গ্রহণ করব। কখনও কোনোরূপ
অভিযোগ করব না।
১৫। প্রতিষ্ঠানের কোনো কানুন অমান্য করলে যথোচিত শাস্তি অথবা বহিস্কারাদেশ গ্রহণে বাধ্য থাকব। এতে আমার এবং
অভিভাবকের কোন প্রকার আপত্তি থাকবে না।




অভিভাবকের স্বীকারোক্তি

আমি ................................................................................ এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে, আমার পুত্র/পোষ্য মুহা: ......................................................................... রোল/ভর্তি নং ........................................ জামিয়ার সকল নিয়ম কানুন মান্য করাসহ উস্তাদগণের সকল পরামর্শ, দিকনির্দেশনা মানিতে বাধ্য থাকবে এবং আমি নিজেও নিম্নবর্ণিত বিষয়াবলির প্রতি অন্তরিক হবো।

১। আমি সর্বদা আমার পুত্র/পোষ্য ছাত্রের শিক্ষা—দীক্ষার স্বার্থে প্রতিষ্ঠানকে সকল প্রকার সাহায্য—সহযোগিতা করব, প্রতিনিয়ত প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কতৃর্পক্ষের সাথে সার্বিক যোগাযোগ রক্ষা করব।
২। দরস/ক্লাস ছুটি হলে কিংবা অন্যান্য সময়ে তাকে বাইরে নিতে হলে নিজ দায়িত্বে আনা—নেওয়া করব।
৩। বাড়ীতে টেলিভিশন, ভিসিআর, ভিসিডি, ডিভিডি, ইত্যাদি চরিত্র ধ্বংসাত্মক কোনো কিছু রাখব না। পুত্র/পৌষ্যের সামনে এনড্রয়েড ফোন ব্যবহারে সংযমী হবো। কোনো অবস্থাতেই তাকে এনড্রয়েড ফোন ব্যবহারের সুযোগ দেব না।
৪। সাক্ষাতের নির্ধারিত সময় ব্যতিত অন্য সময়ে আমার পুত্র/পুষ্যের সাথে সাক্ষাত করব না। বাড়ির ছোটখাটো কোনো অঘটন বা খুনসুটির বিষয়ে তাকে অবহিত করব না।
৫। প্রতি ইংরেজি মাসের ১ম সপ্তাহেই চলতি মাসের বেতন, খোরাকি ও অন্যান্য আদায়যোগ্য টাকা জমা দিয়ে রশিদ বুঝে নেব। অন্যথায় বোর্ডিং কতৃর্পক্ষ তার খানা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিলে তাতে আমার কোনোরূপ আপত্তি থাকবে না।
৬। ছাত্রের কোনো চারিত্রিক ত্রুটি পাওয়া গেলে কতৃর্পক্ষের নির্ধারিত যেকোনো শাস্তি আমি মেনে নেব। এজন্য তাকে বহিস্কার করলে আমার কোনো ওযর—আপত্তি থাকবে না।
৭। প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত আমার কোনো অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট উস্তাদের কাছে কৈফিয়ত না চেয়ে মুহতামিম সাহেবের স্মরণাপন্ন হবো। এ ব্যাপারে তিনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তাই সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেব। বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাদরাসায় যেসকল আইন—কানুন প্রণয়ন করা হবে তার সবগুলো আমি মেনে নিতে বাধ্য থাকব।
৮। অভিভাবক সম্মেলন বা যেকোনো প্রয়োজনে মাদরাসা কতৃর্পক্ষ আমাকে তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।